Thursday, 2 November 2017

কবিগানের রণকৌশল

কবিগানের সাঁজ ও পোশাক : কবিগানকে আরো অলংকৃত করার জন্য কবিয়ালের ধুতি পান্জাবি পড়েন। সাদা ধুতি হলেও পাঞ্জাবি সাদা বা ঘি রঙের পড়তে দেখা যায়। সাদা বা ঘি রঙের উত্তরীয় এর পাতলা  দিকটা তিন ভাঁজ বা চার ভাঁজ করে মেলে দেন অথবা একদিকে বগলের নিচ দিয়া অপর  কাঁধের উপর দিয়া ছড়িয়ে দাও হয়। মঞ্চে কবিয়ালরা খালি পায়ে থাকেন। তবে এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার কবিদের মধ্যে পোশাকের সামান্য তারতম্য আছে ,ধুতি ও পাঞ্জাবির ব্যাপারে এক হলেও ওপর বাংলার কবিয়ালেরা গলায় মাফলার জড়ান ,পায়ে মোজা  পড়েন। মহিলা কবিয়ালের লাল ও সাদা পাড়ের সাদা সুতির কাপড় পড়েন। অনেক সময় কাপড়ের গায়ে ছোট বুটি  থাকে,উত্তরীয় ব্যবহার করতে দেখা যায়। যাঁরা ঢোল বজায় তাঁরা পাঞ্জাবি বা ফতুয়া পড়েন ,ইদানিং অনেক ঢোলবাদক পাজামা ব্যবহার করছে।

কবিগানের বাদ্যযন্ত্র : একসময়ে কবিগানে বাদ্যযন্ত্র : একসময় কবিগানে বাদ্যযন্ত্র বলতে শুধু ঢোল ,জুড়ি ও কাঁসির ব্যবহার দেখা যেত। ঢোলের সাথে কাঁসির ব্যবহার হতো। এখন কাঁসির ব্যবহার আর নেই। ইদানিং কিছু বাদ্যযন্ত্রের আবির্ভাব হয়েছে। সুরের সাথে আঁড়বাঁশির ব্যাবহারও দেখা যাচ্ছে এবং হারমোনিয়ামের ব্যবহার এখন আবশ্যক হয়ে পড়েছে। বাদ্যযন্তের প্রাচীন ধারা অব্যাহত রেখেই কবিয়ালরা এখনো কবিগান করে চলেছে বিষয়টা সত্যি প্রশংসনীয়।

কবিগানের অভিনয় :কবিগানে গানের প্রাধান্যের সাথে সাথে অভিনয়ের ব্যবহার যায়। শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নাটকের ভঙ্গিতে কবিয়ালের অভিনয় করে থাকেন ,ঢোলের তালে তালে অনেক কবিয়ালকে নাচতেও দেখা যায়। কবিয়াল দেবেন চৌধুরী ,সনৎ বিশ্বাস এরা বোলের তালে তালে আসর মাতাতেন ,নাটকের মতো ইম্প্রোভাইজেশন থাকে কবিগানে।গায়ে চাদর পাকিয়ে কোমর বেঁধে কখনো রুদ্রমূর্তি ধরেন ,কখনো ওই চাদর মাথায় দিয়ে মাতৃমূর্তি ধারণ করেন। এইভাবে গান ও সুন্দর অভিনয়ের কাঁধে ভর রেখে কবিগান তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে। 

No comments:

Post a Comment